Posts

Showing posts from April, 2017

হযবরল-৩

আকাশের বোধহয় ভীষণ রকমের মেজাজ খারাপ। কিছুক্ষন পর পর গুড়ূম গুড়ূম করে বিতিকিচ্ছিরি শব্দ করে চলেছে। সেই সাথে বাজখাই গলায় একেকটা বজ্রপাত! শালার হতচ্ছাড়া এসাইনমেন্ট, ল্যাব রিপোর্ট সব জমা দেয়ার তারিখ একদিনে পড়েছে। নাহলে আমি সাধের বিছানায় কুন্ডূলি পাকিয়ে বেশ ঐ বেয়াড়া আকাশের হম্বিতম্বি দেখতে পারতাম। ছোট থাকতে গল্প শুনেছিলাম। আকাশ নাকি এতো এতো উপরে ছিল না। হাতের নাগালেই ছিল। জাদুর বুড়ি একদিন মেজাজ খারাপ করে ঝাড়ু দিয়ে আকাশকে উপরের দিকে মেরেছিল। তাতেই আকাশ অভিমান নাগালের বাইরে চলে গেল। যত্তসব গাঁজাখুরি। ছোটবেলায় অবশ্য এসব গাঁজাখুরিই বেশ লাগতো। আমি কি লিখতে বসেছি? গল্প? কবিতা? উপন্যাস? জানি নাহ লেখকদের উপসংহার জানতে মানা...  

তোমরা বরং “বংশোদ্ভূত”ই থাকো!

একটা পুরনো প্রবাদের বাংলাদেশী সংস্করণ বলি , “ গেয়ো যোগী ভিগ পায় না , আর যখন অন্য দেশে গিয়ে ভিগ পায় তখন বাংলাদেশীরা যোগীকে নিজের মনে করে । ” ধর্ম বাদে অন্য যেকোনো বিষয়ে বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রে এই প্রবাদ গ্রহণযোগ্য । নিজের সম্পদ বিকিয়ে দিয়ে তাকেই আবার সম্পত্তিরূপে গণ্য করা বাঙ্গালিদের আজন্ম স্বভাব। কথাগুলো বলছিলাম মার্গারিটা মামুনের অলিম্পিকে স্বর্ণ পদক জয়ের প্রেক্ষাপটে । পৃথিবীতে ৭৫টি দেশ আছে যাদের পকেটে অলিম্পিকের স্বর্ণপদক জোটেনি এখনও। এর মধ্যে আমার সাধের বাংলাদেশও আছে। বাংলাদেশ অলিম্পিক জেতেনি, না জিতেও আরও অনেক দেশোদ্ধারমূলক কাজ করেছে, সেই জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় আমরা আপাতত না যাই। কথা হচ্ছে, যখনই “বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত” মার্গারিটা মামুন রাশিয়ার হয়ে পুরস্কার জিতে নিলেন তখনই শুরু হলো তাকে নিয়ে বঙ্গ-বন্দনা। হুজুগে বাঙালি পারলে আর কোন মুকুট না পেলে লাক্স চ্যানেল আইয়ের মুকুট নিয়ে পড়িয়ে দেয় মার্গারিটাকে। একবার আমাকে বলবেন, মার্গারিটা আমাদের কিভাবে হলো? রামপাল, বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন, মুসলিম রাষ্ট্র- সব আমাদের হতে পারে, মার্গারিটা না। একবার চিন্তা করে দেখুনতো , মার্গারিটা যদি আমাদের দেশে বে

একা হতে ভুলে গেছি

ইদানীং একা হতে ভুলে গেছি কোন মানুষ না থাকলেও  মনে হয় দূর থেকে এক জোড়া অথবা কয়েক জোড়া চোখ খুব সাবধানে নিরীক্ষণ করছে  আমার প্রতিটি চলাফেরা আমার নিঃশ্বাস প্রশ্বাস এমনকি আমার চাহনি! তবে এই কয়েক জোড়া চোখই আমার একমাত্র সম্বল। আমি যেখানেই যাই  পেছনে পেছনে এক জোড়া চোখ নিয়ে যাই,  কেউ আমাকে দেখছে কেউ আমার কর্মকান্ডের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে এটা ভাবতে বেশ লাগে নিজেকে মানুষ মানুষ লাগে। কিন্তু আমার শব্দগুলোর এই জোড়া চোখের সাথে ভীষণ শত্রুতা!  গভীর রাতে ল্যাপটপ স্ক্রিনের দিকে কিংবা সদ্য কেনা ঝকঝকে খাতার দিকে তাকিয়ে থাকি শব্দেরা আর ধরা দেয় না। মনে হয় এক জোড়া চোখ তাকিয়ে আছে বুভুক্ষের মতন, আমার কবিতার জন্যে আমার গল্পের জন্যে আমার শখের শব্দগুলোর জন্যে! আমি খুব চাই লেখার ঝড়ে দিগ্বিদিক শুন্য হয়ে যাবো,  কিন্তু ঝড়ের আগেই আমার হাত নুয়ে পড়ে। আমি প্রবল উৎসাহে আবার লিখতে বসি এবার আরো গভীর রাত, যাতে মার্ক্স সাহেবের ক্যাপিটালিজমের ঘ্যানঘ্যান আমার কানের পর্দায় বাড়ি না খায়,  আমি কাগজে কলমে জন্ম দিতে চাই এমন ভালোবাসার যাতে,  প্রেমিকের প্রতারণায় আত্নহত্যা

অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ

লাবণ্য ঠোঁট খুঁটছে। ছোটবেলায় অনেক বেশি তিন গোয়েন্দা পড়ার শখ ছিলো। কিশোর পাশা ছিলো পছন্দের চরিত্র। কিশোর খুব চিন্তায় থাকলে ক্রমাগত ঠোঁট খুঁটতে থাকতো। অভ্যাসটা লাবণ্যও রপ্ত করেছে, নিজের অজান্তেই। আজ সে ভীষণরকমের চিন্তিত । আর কিছুক্ষণ পরই কাজী আসবে লাবণ্যের সই নিতে। তার আর আরেফিনের বিয়েটা পারিবারিকভাবেই ঠিক করা হয়েছে। একসময় প্রেম, বিয়ে এসবের প্রতি একটা অন্যরকম টান কাজ করতো এখন আর সেসব কিছুই নেই। আগুন কয়লায় পোড়া জীবনে এসব শখ কর্পুরের মত উড়ে গেছে ।  খুব বাস্তববাদী হয়ে গেছে এখন লাবণ্য। ব্যর্থ প্রেমগুলো থেকে এটুকু বুঝেছে সম্পর্কে ভালোবাসা যতই থাকুক নারী নারী আর পুরুষ পুরুষই থাকে। ছোটবেলা থেকেই সে অনেক একরোখা স্বভাবের ছিলো, অন্যায় সহ্য করতে পারতো না, আর মেয়ে বলে অসমতা তো কখনই পারতো না । কখনো মা তাকে ঘরের কাজ করতে বললেই  লাবণ্যের প্রশ্ন থাকতো, “কেন ভাইয়া বাসার কাজ করে না”? একসময় মা বলতেন, “ও তো ছেলে। ও কেন এসব কাজ করবে এসব তো মেয়েদের কাজ”।  ধীরে ধীরে আরো নিয়ম দেখতে থাকলো সে। মেয়েদের ব্যাগ হাতে নিয়ে দাড়ালে ছেলেদের আত্মসম্মানে লাগে, রান্না করাটা মেয়েদেরই শেখা বাধ্যতামূলক বিয়ের আগে ছেলেদের নয়,