Posts

Showing posts from August, 2018

হসন্ত-২

Image
হসন্ত গতকাল রাতে আমার জানালা গলে অদ্ভুত জোছনা এসেছিল, জানো? আমার কড়া নিহিলিজমের জোছনা নয়, তোমার হুমায়ুন আহমেদীয় ফিনিক ফোঁটা জোছনা। এই যে ইদানীং আমার অযথাই নাক টানার এক বিচ্ছিরি স্বভাব হয়েছে, তার কারণে চাঁদখানা আমাকে ডাকার আগে আমি তাকে খেয়াল করিনি। চাঁদ দেখার একটা বাঁধাধরা নিয়ম আছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত চোখ না জ্বলে ততক্ষন পর্যন্ত ঠায় তাকিয়ে থাকতে হবে, এরপর যখন চোখে বিষম জ্বলুনি হবে তখন শুধু সৌন্দর্যের সামনে মাথা নামিয়ে রাখতে হয়। এমন এক মাথা নোয়ানো মুহুর্তে তুমি ফোন দিয়েছিলে। ধরিনি। ভালোবাসা আর সৌন্দর্য সমানুপাতিক, দুটোকে এক করতে হয় না। কিন্তু দিব্যি দিয়ে বলছি, তোমার কথাই ভেবেছি। এই যে এত অল্প সময়ে আকাশসমান পিছুটান তৈরি হয়ে গেলো সে দায় কার? অবশ্যই তোমার। শাহানা বাজপেয়ীর মত করে বললে, 'আমি তো ছিলাম বেশ চুপিসারে.....'। আমার সেই স্বপ্নভেজা মাটিতে নীলচে আলো জ্বেলে আসার কি খুব প্রয়োজন ছিল? কেউ যে নিজেকে নিজের কাছে বন্ধক রেখে অন্য কাওকে সবকিছু একাকার করে ভালোবাসতে পারে সেই বিচ্ছিরি প্রমাণটা করার খুব প্রয়োজন ছিল? একটা হিসাব তো কষেই নিয়েছিলাম নিজের মত করে, একটা নিজের জগত, একটা বাইরের জগত

অচেনা সিম্ফোনি

Image
আমার সকল 'যদি' কিংবা 'হয়তোবা' খুব শীঘ্রই, অঘোষিত অবসরে যাবে। একটা খুব অচেনা সিম্ফোনি ছেড়ে দেবো- আধুনিক বিষযন্ত্রে। বিউগল বাজবে প্রেমিক! লাশকাটা ঘরে ব্যাকগ্রাউন্ডে.... রংচটা ঘড়িটা ভুল সময়ে ঠিক মুহুর্ত জানান দেবে। নৈশব্দ ভাঙবে পুরনো রক্তের টুপটাপে। তাড়ি খেয়ে চোখ লাল করা ডোম অপেক্ষায় থাকবে দাবার মাঠে পরাজিত সর্বশেষ লাশের.... জীবিত আর মৃতের মাঝের তফাৎ কদ্দুর? এক নিশ্বাস সমান। যে কৃষ্ণচূড়ার লোভে গৃহত্যাগ সেই ফুল নতজানু হয়ে হবে পিঙ্গলবর্ণ... যে স্বপ্নেরা ছিঁড়েখুঁড়ে খেয়েছিল শেয়ালরূপে তারা পাবে অমরত্ব, প্রেমিক! হেমলকের পেয়ালা জমা রইবে ওয়াইনের সেলারে। প্রতিজ্ঞারা মাথা হেট করে চলবে ছায়াপথের কিনার ঘেসে, অজ্ঞাতনামা ফুলের অবৈধ আলিঙ্গনে... পোস্টমর্টেম বেডে এফোঁড়ওফোঁড় বৃথা আস্ফালন নীলেদের... কোথাও এতটুকু সন্দেহ থাকবে না, শুধু থাকবে, নিশ্চয়তা- পাহাড়সম শীতলতার। নিউরনে নিউরনে আবদ্ধতা ফুরোবে, প্রেমিক! থমকে থমকে চলা হৃৎপিণ্ডের সাথে শুধু ঐ ভোঁতা অনুভুতিটুকু বাদে, যেখানে তোমার আমার বসতি। অতএব, চলো আমরা মারা যাই, জাতিস্মর হবার প্রতিজ্ঞা নিয়ে।

হসন্ত-১

Image
হসন্ত একটা ছায়াহীন প্রান্তর জুড়ে হেটে যাচ্ছিলাম, বহুদিন ধরে, বহুক্রোশ পথ। পলাতক আসামীর মত দিগ্বিদিক শুন্য হয়ে। কোথাও থিতু হওয়া প্রয়োজন ছিল খুব, আশ্রয়ের আশায় কখন পাথর আকড়েছিলাম, কখনো আস্ত গাছ, কখনো সমুদ্রের সামনে মেলে দিয়েছিলাম, পাহাড়ের মাঝে প্রতিধ্বনির মত ছড়িয়ে গিয়েছিলাম। তোমরা  আমাকে বাঁচানোর জন্য একটা ছাপোষা নেমন্তন্ন দিয়েছিলে বটে! কিন্তু সে নেমন্তন্ন গ্রহণ করা চলে না, তার পরতে পরতে পূর্ববর্তী আক্রোশ কিংবা অনাগত ষড়যন্ত্র। তোমাদের নগরীতে যখন ঝলমলে রোদ, আমার ঘরের মাঝে মাঘের শীত, ধোঁয়া ধোঁয়া আলতো কুয়াশা। এই সময়গুলো হাফ ধরা, পরাজিত। একটা ঘুণে ধরা সিন্দুকে স্মৃতিগুলো জমা রাখা ছিল। কাঁচপোকা হয়ে উড়ে গেছে। প্রয়োজনের জাল ভীষণ বিস্তৃত করেও তাকে ধরা যায়নি। অংশবিশেষ রয়ে গেছে, কাঙ্গালের সেটাই সম্বল। এ কবর থেকে সে কবরে ছুটে চলার মুহূর্তে হুট করে জংলী ফুলের কাঁটার মত বিঁধে গেলে, পায়ের বদলে সারা শরীরে। আমার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল, বদলে আমি বুক ভরে শ্বাস নিলাম। কতগুলো জোনাক হলে একটা হৃৎপিণ্ড বিচ্ছুরিত আলোকউৎসের মত পথ দেখাবে, তোমাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তুমি হেসেছিলে, একেক হাসির একেক রঙ হয়,