হসন্ত-১

হসন্ত
একটা ছায়াহীন প্রান্তর জুড়ে হেটে যাচ্ছিলাম, বহুদিন ধরে, বহুক্রোশ পথ। পলাতক আসামীর মত দিগ্বিদিক শুন্য হয়ে। কোথাও থিতু হওয়া প্রয়োজন ছিল খুব, আশ্রয়ের আশায় কখন পাথর আকড়েছিলাম, কখনো আস্ত গাছ, কখনো সমুদ্রের সামনে মেলে দিয়েছিলাম, পাহাড়ের মাঝে প্রতিধ্বনির মত ছড়িয়ে গিয়েছিলাম। তোমরা  আমাকে বাঁচানোর জন্য একটা ছাপোষা নেমন্তন্ন দিয়েছিলে বটে! কিন্তু সে নেমন্তন্ন গ্রহণ করা চলে না, তার পরতে পরতে পূর্ববর্তী আক্রোশ কিংবা অনাগত ষড়যন্ত্র। তোমাদের নগরীতে যখন ঝলমলে রোদ, আমার ঘরের মাঝে মাঘের শীত, ধোঁয়া ধোঁয়া আলতো কুয়াশা।

এই সময়গুলো হাফ ধরা, পরাজিত। একটা ঘুণে ধরা সিন্দুকে স্মৃতিগুলো জমা রাখা ছিল। কাঁচপোকা হয়ে উড়ে গেছে। প্রয়োজনের জাল ভীষণ বিস্তৃত করেও তাকে ধরা যায়নি। অংশবিশেষ রয়ে গেছে, কাঙ্গালের সেটাই সম্বল।

এ কবর থেকে সে কবরে ছুটে চলার মুহূর্তে হুট করে জংলী ফুলের কাঁটার মত বিঁধে গেলে, পায়ের বদলে সারা শরীরে। আমার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল, বদলে আমি বুক ভরে শ্বাস নিলাম। কতগুলো জোনাক হলে একটা হৃৎপিণ্ড বিচ্ছুরিত আলোকউৎসের মত পথ দেখাবে, তোমাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তুমি হেসেছিলে, একেক হাসির একেক রঙ হয়, সেদিন জেনেছিলাম। তোমার হাসির রঙ বেগুনী। 

তোমার দেয়া জোনাকিটা জাতিস্মর, জানো?

ইতি,
তোমার দেয়া আমার কোন, 'নাম ছিল না, নাম ছিল না"

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

হসন্ত-২

অচেনা সিম্ফোনি

তোমরা বরং “বংশোদ্ভূত”ই থাকো!