হযবরল-১

আমার এই অতি আধুনিক শহরে শীতের দিনগুলো খুব ছোট। বিকেল চারটে বাজতে না বাজতেই নিঝুম অন্ধকার নামে৷ ক্লাস শেষ করে ট্রেন স্টেশনে গিয়ে দাড়াই অলস পায়ে। মহীনের ঘোড়াগুলি বোধহয় এই স্টেশনগুলো দেখলে পরবর্তী গানের রসদ খুজে পেতো সহজেই। সময়ের সাথে পাল্লা দেয়ার কি এক অবিশ্রান্ত চেষ্টা সবার। নাগরিক রোবটের মত ট্রেনগুলো সামনে এসে দাঁড়ায়, ভেড়ার পালের মত কিম্ভুতকিমাকার মাংসপিন্ড চড়ে বসে। সাঁইই করে ছুটে যায় গন্তব্যস্থলে। এই ছোটার কোন বিরতি নেই, শুধু ব্যস্ততা আছে। জীবনান্দের মত আমি কোন অদ্ভুত দৃষ্টি নিয়ে হেটে চলা মানুষ দেখি না, যে যেখানে যেতে চায় সেখানে হেটে যাবার  মত অবসর তার আছে। অবসর এখানে বিলাসিতা, তাই উন্নতি তুংগে, আর সুখ তলানিতে৷ প্রথম প্রথম যখন এসেছিলাম, তাদের অপরিচিতদের সম্বোধন করা দেখে ভেবেছিলাম, বাহ খুব বুঝি অসাধারণ জাতি। কিন্তু প্রতিবারের মতই বুঝলাম, প্রথম দেখায় যা সুন্দর লাগে তার সৌন্দর্য বেলাশেষে খুব অল্পই অবশিষ্ট থাকে। এখন বুঝি এই খুব সুন্দরের দেশটাও এক অদ্ভুত বিষণ্ণ দেশ, শুধু তারা তা জানে না। আলো তার নিচে ছায়া খুব একটা দেখতে পায় না। সেটাই স্বাভাবিক।

Comments

Popular posts from this blog

হসন্ত-২

অচেনা সিম্ফোনি

তোমরা বরং “বংশোদ্ভূত”ই থাকো!