Posts

Showing posts from June, 2017

অনুযোগের অভ্যাস

ঝুম বৃষ্টির চেয়ে ঝিরঝিরে বৃষ্টি আমার বেশি পছন্দের। শরীর ভেজে না, মন ভিজে যায়। ক্যান্সার হাসপাতালের মাঝের ছোট্ট ব্রিজের উপর দাড়িয়ে বৃষ্টি দেখছিলাম। ছোট্ট একটা কাজে এসেছিলাম। সময়ের আগেই চলে আসায় কানে অনুপমের "আমি আজকাল ভালো আছি" নিয়ে ঠায় দাড়িয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই। এই আবহাওয়ায় এমন উপায় যে ভীষণ উপাদেয় তা অস্বীকার করারও জো নেই। মানুষ দেখা পৃথিবীর মধুরতম নেশা। বিশেষ করে বর্ষার কদম ফুল কিংবা কয়েক জোড়া ব্যাঙের ডাক বঞ্চিত  বৃষ্টিবন্দী মানুষের জন্য। আমি মানুষ দেখছিলাম। একজন, এক জোড়া কিংবা পুরো পরিবার। মানুষেরাও আমাকে দেখছিলো। কেবিনে যেসব পরিবার কেমোথেরাপি কিংবা সার্জারির জন্য ভর্তি আছে তাদের আত্মীয়-স্বজনেরা। দাঁত মাজতে মাজতে বৃষ্টির সাথে একজন মেয়েকে দেখাও কম সুখকর নয়। কতজনকে কবি বানিয়ে দিলাম আজ কে জানে!  আমার জীবনের মূল উদ্দেশ্য প্রস্থান। উঁহু, পালিয়ে যাওয়া নয় কিংবা ক্লান্ত হয়ে গেছি বলে চলে যাওয়া নয়। বরং হাঁপিয়ে যাওয়ার আগেই, মুখোশের মত চামড়ায় সংসার আটকে যাওয়ার আগেই প্রস্থান। যতটুকু জীবন আমি যাপন করতে চাই তার সবটুকু করেই তবে যাবো, হারিয়ে যাবো। পাহাড়ে কিংবা সাগরে। আমার মৃত্যু যেন

মৃত

Image
প্রিয় 'কানাবাবা', পুরনো চাল ভাতে বাড়ে-এই প্রবাদের উৎপত্তি কোথা থেকে বলতে পারো? যেখান থেকেই হোক, ব্যাপারটার সাথে জীবনের এক বিশাল যোগসাজশ আছে কিন্তু। পুরনো সম্পর্কগুলো কোন রসদ ছাড়াই কেমন এগিয়ে যায়, বহুদিন পরের কথোপকথনেও কেমন পুরনো সোঁদা গন্ধ পাওয়া যায়। অথবা সাহিত্যের খট্মট ভাষায় বলা যায়, পুরনো সম্পর্কগুলোতে এক শব্দেই একেকটা উপন্যাস হয়, আর এক লাইনেই বিশাল মহাকাব্য? আমার মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে হয় জানো টেলিফোন অপারেটর হতে। আমাদের কথোপকথন তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে শুনতে। পূর্ণেন্দু পুত্রীর আধুনিক সংস্করণ একটা আমরা কিন্তু প্রকাশ করেই ফেলতে পারতাম এর থেকে, কি বলো? ইদানিং তুমি ফোন দিলে আমি কেমন যেন আঁতকে উঠি জানো তো? কি বলবো কিছু বুঝে উঠতে পারি না, কখনো দেখা যায় তোমার কথার অর্থই ধরতে পারি না। পরিশিষ্ট প্রেমের আবেগ বলে একে ভুল করোনা কিন্তু! এসব আবেগ, অভ্যাস সব মামুলি বিষয়। বাজারে সদ্য আসা ডিটারজেন্ট দিয়ে একবার ধুলে সব কিছু ধুয়ে মুছে সফেদ হয়ে যাবে। আমারটাও গ্যাছে, বাষ্পীভূত হয়ে, পেন্ডুলামের সহস্র দোলনে, অ্যাবস্ট্রাক্ট পেন্টিং এর মত উড়ে চলা সিগারেটের ধোঁয়া আর তপ্ত নোনা জলের স্বাভাবিক এবং সহজাত প্র

অতিব্যস্ত অনাহূত

Image
মাঝ রাত্তিরে বুকের কষ্ট রক্তে ছড়িয়ে গেলে খুব আরাম হয়। গলা পর্যন্ত আটকে থাকা বুর্জোয়া কান্নাগুলো আহ্লাদি শুয়োপোকার মতন দিকভ্রান্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে, পুরো শরীরে, অনেকটা কিংবা পুরো হিরোইনের মত। মনে মনে বলি, যাক শালা! কষ্টের সুষম বণ্টন হলো তবে! ক্লান্ত ময়রার মত দুঃখগুলোকে মাছি মনে করে এদিক ওদিক থেকে সরাতে থাকি। ঠিক যেমন শওকত আলী বলেছিলেন দীর্ঘদিনের শোকে হাহাকার থাকে না, তেমনি বিষাদবিহীন কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছি পুরো শরীরে ক্যান্সারের মত, নাকি এইডসের মত? তলপেটের নিচটায় প্রায়ই একরকম শিরশিরে অনুভূতি হয়, মনে হয় কোন বিশালাকার সরীসৃপ আমার চামড়ার সর্বস্ব চেটে এগিয়ে চলছে। আমার ভীত সন্ত্রস্ত তলপেট জাগ্রত হয়ে ওঠে, মুহূর্তের মাঝে, এমনকি ঘুমের মাঝেও। সেই চামড়ায় লেপ্টে থাকা জাগ্রত অনুভূতিটা জিতেন্দ্রিয়ের মত এগিয়ে যেতে থাকে আমার যোনিপথের দিকে। হ্যাঁ, এই নামেই চিনেছিলাম একে। তবে চেনার বহু আগেই জেনেছিলাম, দেখার অনেক আগেই বুঝেছিলাম। চামড়ার মাঝে জলন্ত সিগারেট ঠেসে ধরার মত একটা অনুভূতি হয়। জ্বলাটা ওখান পর্যন্ত থাকলেও হতো, কিন্তু থাকে না। অবাধ্য স্রোতের মত শিরা-উপশিরার মধ্য দিয়ে ওপরে উঠতে থাকে। মাঝে মধ্যে মিশে যায় আমা