একা হতে ভুলে গেছি
ইদানীং একা হতে ভুলে গেছি
কোন মানুষ না থাকলেও
মনে হয় দূর থেকে এক জোড়া অথবা কয়েক জোড়া চোখ
খুব সাবধানে নিরীক্ষণ করছে
আমার প্রতিটি চলাফেরা
আমার নিঃশ্বাস প্রশ্বাস
এমনকি আমার চাহনি!
তবে এই কয়েক জোড়া চোখই
আমার একমাত্র সম্বল।
আমি যেখানেই যাই
পেছনে পেছনে এক জোড়া চোখ নিয়ে যাই,
কেউ আমাকে দেখছে
কেউ আমার কর্মকান্ডের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে
এটা ভাবতে বেশ লাগে
নিজেকে মানুষ মানুষ লাগে।
কিন্তু আমার শব্দগুলোর এই জোড়া চোখের সাথে ভীষণ শত্রুতা!
গভীর রাতে ল্যাপটপ স্ক্রিনের দিকে
কিংবা সদ্য কেনা ঝকঝকে খাতার দিকে তাকিয়ে থাকি
শব্দেরা আর ধরা দেয় না।
মনে হয় এক জোড়া চোখ তাকিয়ে আছে
বুভুক্ষের মতন,
আমার কবিতার জন্যে
আমার গল্পের জন্যে
আমার শখের শব্দগুলোর জন্যে!
আমি খুব চাই লেখার ঝড়ে দিগ্বিদিক শুন্য হয়ে যাবো,
কিন্তু ঝড়ের আগেই আমার হাত নুয়ে পড়ে।
আমি প্রবল উৎসাহে আবার লিখতে বসি
এবার আরো গভীর রাত,
যাতে মার্ক্স সাহেবের ক্যাপিটালিজমের ঘ্যানঘ্যান
আমার কানের পর্দায় বাড়ি না খায়,
আমি কাগজে কলমে জন্ম দিতে চাই
এমন ভালোবাসার যাতে,
প্রেমিকের প্রতারণায় আত্নহত্যা করার মেয়েটির লেখা সব কবিতাগুলো
একে একে মহাকাব্য হয়ে যায়।
এমন সংগ্রামের যাতে,
ব্রেকিং নিউজগুলো পরিণত হয় '৭১ এর মত রগরগে শিরোনামে।
এমন সুখের যাতে,
সুকান্তের ঐ অমাবস্যার চাঁদটাকে আর কারো ঝলসানো রুটি মনে হবে না।
কিন্তু আমি পারি না
আমার শব্দেরা মুখ গুজে থাকে
আমার শব্দেরা কুঁকড়ে থাকে
ভয়ে অথবা জড়তায়?
আমি চাইলেও একা হতে পারি না
এক জোড়া কিংবা কয়েক জোড়া চোখ
তাকিয়ে থাকে
অতি বিস্ময়ে
অতি ঘৃণায়
অতি ভালোবাসায়
কিংবা এক ক্ষুদিত শব্দ-পাষাণের মতন!
Comments
Post a Comment