মরণ বিলাস

 মৃত্যু নিয়ে আমার মাঝে বেশ আয়েশী ভাব কাজ করে। আমি কিভাবে বেঁচে থাকতে চাই সে ব্যাপারে আমার খুব একটা মাথা ব্যাথা না থাকলেও আমি কিভাবে মারা যেতে চাই, সে নিয়ে আমার সুক্ষাতিসুক্ষ চাহিদা আছে। চাহিদাগুলোর পূরণ শুধু আমার কেন, কারো হাতেই নেই বলা যায়। আর সে কারণেই এই বেয়াড়া চাহিদাগুলো এত আরাধ্য। 

ইদানীং আমার হুট করে মারা যাবার ইচ্ছেকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রাখে ঝুম বৃষ্টিতে মারা যাবার ইচ্ছে। শব্দের কারিগর হুমায়ূন আহমেদ মরণ চেয়েছিলেন চান্নিপসর রাইতে। কেন কে জানে? এই পৃথিবীতে ফিনিক ফোটা জোছনা নামবে, আর তিনি থাকবেন না, এর চেয়ে বড় আফসোস তার আর বোধহয় ছিল না। লেখকরা বোধহয় এমনই হন। অজস্র্য অমূল্য জিনিস তাদের জীবনে থাকলেও শুধুমাত্র কোন এক ঠুনকো জিনিসের অভাবে তাদের পুরো জীবন ব্যর্থ হয়ে যায়। সাফল্যের গল্পগুলো বোধহয় খুব বেখেয়ালী। নাহলে কেন নির্মলেন্দু গুণ শুধু কারো ঘুমের মাঝে দীর্ঘশ্বাসের জন্য মারা যেতে চাইবেন? কবিদের হয়তো খামখেয়ালী হতেই হয়, নাহলে হয়তো কবিত্ব হাঁপিয়ে ওঠে। 


আমার অচিনদেশে পাড়ি দেবার দিনে পুরো আকাশ কাঁপিয়ে বৃষ্টি নামে। সোঁদা মাটির গন্ধ যেন হয়ে ওঠে আমার আগরবাতি। ঝুম বৃষ্টি যেন ছাপিয়ে যায় আমার শেষ বিদায়ের কান্নাকে। সবার অজান্তে যেন আমার বিদায়কে অনাড়ম্বর করে তোলে দূর মফস্বলের কোন দূর্গা এবং অপু। প্রতিটা বজ্রপাত যেন প্রতিটা মায়াকান্নার বিরুদ্ধে। আমার মৃত্যুর চেয়ে যেন মানুষ আমার মৃত্যুদিনের বৃষ্টিকে বেশি মনে রাখে। 

Comments

Popular posts from this blog

হসন্ত-২

অচেনা সিম্ফোনি

তোমরা বরং “বংশোদ্ভূত”ই থাকো!